ক্ষমতায় আসতে জাইমা রহমানকে নিয়ে নামতে হবে বিএনপিকে : ডা. জাফরুল্লাহ
দৈনিক মানচিত্র ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ০৬ ডিসেম্বর ২০২০, ৯:৫৩ পূর্বাহ্ণসবুজ সিলেট ডেস্ক ::
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্ব এবং গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, রাষ্ট্রক্ষমতায় আসতে হলে বিএনপির (ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন) তারেক রহমানকে নয়, তার একমাত্র মেয়ে জাইমা রহমানকে সঙ্গে নিয়ে মাঠে নামতে হবে। জাইমা এলে যে আন্দোলনের জোয়ার শুরু হবে, তাতে আওয়ামী লীগ সভাপতি (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) তার যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী এসেছে বলে টের পাবেন।
শনিবার (৫ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, যদি বিএনপি সত্যি চায় ক্ষমতার পট পরিবর্তন হোক, তাহলে বিএনপির দায়িত্ব অনেক বেশি এখানে। তারেকের স্তুতি গেয়ে ক্ষমতায় আসতে পারবেন না কোনো দিন। আপনারা যদি সত্যিকারার্থে ক্ষমতায় আসতে চান, জনগণের ক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত করতে চান, মাঠে বসতে হলে আমার মতে জাইমাকে সঙ্গে নিয়ে নামতে পারেন। তারেককে নিয়ে নয়। আমি তারেককে কোনো দোষ দিচ্ছি না। স্ট্র্যাটেজি বলে একটা কথা আছে, আমরা বললেই তার বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার হবে না এবং বাংলাদেশের মাটিতে ফিরতে পারবেন না। একমাত্র গণতন্ত্রের বিজয় হলেই তারেক দেশে ফিরতে পারবেন।
‘বিএনপির উচিত হবে খালেদা জিয়াকে প্রতিদিন ঘরের মধ্যে আবদ্ধ না রেখে, প্রতিদিন ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে বসতে হবে। যেন জনগণ দেখতে পায় তাদের নেত্রীকে অন্যায়ভাবে আটকে আন্দোলনকে দমিয়ে রাখা হয়েছে। সেখানে যদি জাইমা আসে, তাহলে তাকে নিয়ে সারাদেশ ঘুরে বেড়াবে (বিএনপি)। তখনই দেখবেন জোয়ার কীভাবে ওঠে, তখনই শেখ হাসিনা টের পাবেন তার যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী এসেছে।’
জাফরুল্লাহ চৌধুরী আরও বলেন, আমরা ঘরের ভেতর যেসব কথা বলি কাজে তা প্রমাণ করি না। বিশেষ করে বিএনপির বেলায় এ কথা প্রযোজ্য। বিএনপিতে যেখানে খায়রুল কবির খোকন, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের মতো লোকেরা আছেন, এতগুলো তরুণ আছেন, খালেদা জিয়া কেন চুপচাপ গুলশানের মতো বাড়িতে আবদ্ধ থাকবেন? জজ সাহেবরা একটা অন্যায় বিচার করেছেন, দুই কোটি টাকার জন্য সেই বিচার এখনো সমাপ্ত হয়নি। অন্ততপক্ষে জামিনটা তো অবশ্যই হওয়া উচিত।’
সরকার এখন জনগণের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে অভিযোগ করে জাফরুল্লাহ বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন ষড়যন্ত্র চলছে। এই ষড়যন্ত্র কারা করেছে? এই সরকারই তো করেছে। এই ষড়যন্ত্রের মূল ভিত্তি দুর্নীতি। সাত হাজার কোটি টাকা দিয়ে যে পদ্মা সেতু হতো সেটার খরচ ৫০ হাজার কোটিতে পৌঁছেছে। এই টাকা কোথায় যাবে, এমন হাজারটা প্রমাণ আছে।
ভাস্কর্য বিতর্ক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আজকে আলেমদের দিয়ে যে বিতর্ক আনা হয়েছে তার জন্য আওয়ামী লীগ দায়ী। এয়ারপোর্টের সামনে লালনের ভাস্কর্য ছিল, সেটা নিয়ে হুমকি-ধমকি শুনে সরকার চুপচাপ বসেছিল। এখন গায়ে লাগছে। তারা আজকে শেখ মুজিবের ভাস্কর্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। আমার একটা বক্তব্য নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে, আমি সে সম্পর্কে বলতে চাই আলেমরা শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি, আপনাদের অযথা বিতর্কে জড়িয়ে পড়া ঠিক নয়। আজকে ভাস্কর্য বিতর্কে যাওয়া ইসলামের জন্য ক্ষতিকর। ভাস্কর্য বিতর্কে না জড়িয়ে জনগণের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে আসেন।
জাগপার সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের গণমাধ্যম উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু, কৃষক দলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মোহাম্মদ আনোয়ার, কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ।
সবুজ সিলেট/ এস মায়াজ আহমদ তালহা