সুনামগঞ্জে মা-বাবা উভয়ের সান্নিধ্য লাভের জন্য ৫০টি মামলার ঐতিহাসিক রায়
দৈনিক মানচিত্র ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ২৫ নভেম্বর ২০২০, ২:৪৯ অপরাহ্ণ
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :: ঐতিহাসিক এই আপোষ নিষ্পত্তির মাধ্যমে সুনামগঞ্জে নারী ও শিশু নির্যাতন ধমন ট্রাইব্যুনালের ৫০টি মামলার আপোষ নিষ্পত্তির হয়েছে। শাস্তি নয়,শান্তি,সম্প্রতির সুবাতাস আর ফুলের গন্ধ বিলিয়ে মামলা নিষ্পত্তির মাধ্যমে ৫০টি পরিবারকে ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করে স্ত্রীকে স্বামীর নিকট, আর স্বামীকে স্ত্রীর নিকট এবং সন্তানদেরকে তাদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল মা-বাবা উভয়ের সান্নিধ্য লাভের জন্য এই রায় দেওয়া হয়েছে।
বুধবার দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন ধমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে হাজির হয়ে ৫০ মামলার আপোষ নিষ্পত্তি করেন বাদী বিবাদী গণ।
পারিবারিক বিরোধের জেরে ১১ এর গ ধারায় সংঘটিত এসব মামলার আপোষ নিষ্পত্তির সময় ফুল ও লজেন্স দিয়ে স্বামী স্ত্রী ও সন্তানদের বরণ করে নেন নারী ও শিশু নির্যাতন ধমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্দ জাকির হোসেন।
আদালত সূত্র জানায়, নির্যাতনের শিকার হয়ে এই ৫০ নারী তাদের স্বামীর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছিলেন। মামলার ফলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যুদ্ধাংদেহী অবস্থান তৈরি হয়। এতে তাদের সন্তানদের জীবন, নিরাপত্তা, খাদ্য, বাসস্থান, আদর-যত্ন, ভালবাসা, বর্তমান ও ভবিষ্যত অনিশ্চয়তার মধ্যে ডুবে যায়। স্ত্রী স্বামীর ঘরছাড়া হয়ে সন্তান-সন্ততি নিয়ে এক অনিশ্চিত জীবনের পথে হাটছিলেন। সেই অনিশ্চয়তা জীবনের অবসান ঘটিয়ে সংসারে-সমাজে শান্তি ও সৌহার্দ্যরে পরিবেশ সৃষ্টি করতে আসামিদের খালাস দেন আদালত।
আদলত কর্তৃক ৫০ মামলার আসামিদের খালাস প্রদানের রায়ের পর স্বামী-স্ত্রী পরস্পরকে ফুল ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। এ সময় আদালত আঙিনায় এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায় অনেক স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানদের। ভাঙনের দ্বারপ্রান্তে দাঁনানো ৫০ টি সংসার আদালে রায়ে জোড়া লাগার এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন মামলার বাদি-বিবাদি, আইনজীবীসহ সাধারণ মানুষ।
এ ব্যাপারে অ্যাডভোকেট নান্টু রায় বলেন, আদালত পৃথক ৪৭টি নারী-শিশু নির্যাতন দমন মামলায় একসঙ্গে যুগান্তকারী একটি রায় দিয়েছেন। সকল মামলার বাদী বিবাদীকে আপোষে মিলিয়ে দেওয়া হয়েছে। আদালত বলেছেন, স্বামী-স্ত্রীকে মিলেমিশে পরিবারে একত্রে বসবাস করতে হবে। ভবিষ্যতে তারা ঝগড়-বিবাদ না করে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বসবাস করবেন। ঐতিহাসিক এই আপোষ নিষ্পত্তির মাধ্যমে স্ব স্ব পরিবারের স্বামী স্ত্রী সন্তানরা মিলিত হয়ে স্বামীগণ স্ত্রী ও সন্তানদের বাড়ি নিয়ে গেছেন।