বড়লেখা পৌর নির্বাচন: পুনর্র্নিবাচিত নাকি পুনরুদ্ধার
দৈনিক মানচিত্র ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ০২ ডিসেম্বর ২০২০, ৮:২৬ পূর্বাহ্ণআশফাক জুনেদ, বড়লেখা
তফসিল ঘোষনা অনুযায়ী আগামী ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে মৌলভীবাজারের বড়লেখা পৌরসভা নির্বাচন।নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতিমধ্যে দলীয় প্রার্থী নির্বাচন করে ফেলেছে দেশের বৃহৎ দুই রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামিলীগ এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ।মেয়র পদে আওয়ামিলীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান মেয়র ও উপজেলা আওয়ামিলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল ইমাম মোঃ কামরান চৌধুরী আর বিএনপিতে মনোনয়ন পেয়েছেন গত নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়া পৌর বিএনপির সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম।শেষ পর্যন্ত ভোটের মাঠে লড়াই হবে তাদের মধ্যে। তবে কে আসছেন পৌরপিতা হয়ে তা নিয়ে জল্পনা কল্পনার শুরু হয়ে গেছে।পুনর্র্নিবাচিত নাকি পুনরুদ্ধার নিরবে সেই হিসাব কষছেন পৌরবাসী।চায়ের চুমকে চলছে সেই আলোচনা।
এদিকে মনোনয়ন পত্র দাখিল কিংবা প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া না হলেও গোপনে প্রচার প্রচারনা শুরু করে দিয়েছেন এই দুই প্রার্থী। পৌরসভার নাগরিকদের সাথে যোগাযোগ করে দোয়া চাচ্ছেন।যোগাযোগ বাড়াচ্ছেন দলীয় নেতাকর্মীদের সাথেও।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও পৌর নির্বাচন নিয়ে সরব দুই প্রার্থীর অনুসারীরা।নির্বাচনকে সামনে রেখে জনগনের দোয়া ও ভোট চাচ্ছেন তারা।
সরেজমিন পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখা যায়,মানুষের মুখে মুখে এখন পৌর নির্বাচন। চায়ের দোকান থেকে রেস্তোরা সর্বত্র চলছে আলোচনার ঝড়-কে হচ্ছে পৌর পিতা।পথে প্রান্তরে হাটে ঘাটে আর চায়ের চুমকে চলছে ভোট দেওয়া- নেওয়ার নিখুঁত হিসাব।বর্তমান মেয়র ফের পুনর্র্নিবাচিত হচ্ছেন নাকি ২০১৫ এর নির্বাচনে মেয়র পদ হারানো সেই জায়গা পুনরুদ্ধার করে ফের দখলে নিচ্ছেন বিএনপি প্রার্থী এ নিয়ে সরগরম ভোটের মাঠ।
জানা যায়, ২০০২ সালের মধ্যভাগে বড়লেখা পৌরসভার প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলহাজ মো. আব্দুল মালিক দলীয় সমর্থনে পৌর চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ওই বছরের ১১ জুন কার্যভার গ্রহণ করে ২০০৮ সালের পয়লা ডিসেম্বর পর্যন্ত আমৃত্যু টানা সাড়ে ৬ বছর তিনি দায়িত্ব পালন করেন। এরপর দু’বছরের বেশি সময় প্যানেল মেয়র মো. মতিউর রহমান ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বড়লেখা পৌরসভার দ্বিতীয় নির্বাচন ২০১১ সালের প্রথম দিকে অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী প্রভাষক মো. ফখরুল ইসলাম মেয়র নির্বাচিত হন। তিনি ওই বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণ করেন। একইভাবে ২০১৫ সালের শেষ দিকে পৌরসভার সর্বশেষ ও তৃতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো নৌকা প্রতীক নিয়ে বিএনপির প্রার্থীকে হারিয়ে বিজয়ী হন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আবুল ইমাম মো. কামরান চৌধুরী। তিনি ২০১৬ সালের ৩১ জানুয়ারি কার্যভার গ্রহণ করে এখনো দায়িত্ব পালন করছেন।
এদিকে ২০১৫ সালের নির্বাচনে মেয়র পদের ধারাবাহিতা ধরে রাখতে না পেরে এবারের নির্বাচনে মেয়র পদ পুনরুদ্ধারে মরিয়া হয়ে মাঠে কাজ করবে বিএনপি।দলের একাধিক সুত্র জানিয়েছে,দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করতে আপ্রাণ চেষ্টা থাকবে তাদের।এ জন্য এখন থেকে ভোটারদের ধারে ধারে যাচ্ছেন মেয়র প্রার্থী সহ দলের নেতাকর্মীরা।তারা আশাবাদি আগামী নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী বিপুল ভোটে জয়লাভ করবেন।
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সহিদ খাঁন বলেন,জনগন যদি স্বাধীন ভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পায়, মানুষ ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারে তাহলে আমরা শতভাগ আশাবাদি বিএনপির প্রার্থী আনোয়ারুল ইসলাম বিপুল ভোটে জয়লাভ করবেন।জনগন আমাদের সাথে আছে, ইনশাআলাহ বড়লেখা পৌরসভা আবারও বিএনপির দখলে আসবে।
এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামিলীগের (ভারপ্রাপ্ত) সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম সুন্দর বলেন,গত পাঁচ বছরে মন্ত্রী মহোদয়ের অক্লান্ত পরিশ্রমে বর্তমান মেয়র কামরান চৌধুরীর মাধ্যমে বড়লেখা পৌরসভায় যতেষ্ট উন্নয়ন সাধিত হয়েছে।অনেক বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে।জনগন সন্তুষ্ট । আমরা আশাবাদি আগামী ২৮ ডিসেম্বরের নির্বাচনে জনগনের স্বতঃস্ফূর্ত ভোটের মাধ্যমে আবারও আওয়ামিলীগের প্রার্থী মেয়র হিসাবে পুনর্র্নিবাচিত হবেন।
সবুজ সিলেট/০২ডিসেম্বর/সেলিম হাসান